বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, নীতিগত অবস্থান থেকে নয়, রাজনৈতিক কৌশল ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে দমন করতে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ড. আসিফ নজরুল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদ হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রচারণা চালানোর যে কৌশল নিয়েছিল আমরা তো সেই কৌশলের অংশ হতে পারি না। আওয়ামী লীগ দলীয় নীলনকশার অংশ হিসেবে এবং ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকে দমনের অংশ হিসেবেই জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। আমরা প্রত্যাখ্যাত ও পরাজিত একটি দলের (আওয়ামী লীগ) অন্যায় কৌশলের অংশ হতে পারি না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি, আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছে, একসঙ্গে আন্দোলন করেছে। জামায়াতের প্রয়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছিলেন- তিনি শুধু আওয়ামী লীগেরই নেতা নন সকল বিরোধী দলের নেতা। এছাড়া প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনের সময়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জামায়াতের আমির গোলাম আজমের কাছেও দোয়া চাইতে গিয়েছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমরা পত্রপত্রিকায় দেখেছি, সর্বশেষ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নির্বাচনে আনার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। এরপরও আওয়ামী লীগের কেউ কেউ জামায়াতকে নিষিদ্ধের কথা বলত। মূলত আওয়ামী লীগ জামায়াতকে চাপে রেখে দলীয় স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করতো।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পরাভূত হওয়ার আশঙ্কা করলো, তখনই পুরো বিপ্লবটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অবাধে দমন-নিপীড়নের পর জামায়াতকে নিষিদ্ধ করল।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে যে অপকর্ম করেছে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না। তবে আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নই। যতক্ষণ পর্যন্ত না একটি রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না হয়।