তিন চরিত্রে মোশাররফ করিম

নব্বই দশকে শুরু মোশাররফ করিমের অভিনয় জীবন। আজ পর্যন্ত কত রকমের কাজই না করেছেন তিনি। কিন্তু যেটা করেননি, এবার সেটিও করে ফেললেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে প্রথমবার অভিনয় করলেন অ্যান্থলজি সিরিজে। আর সেটিও দেশের জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফরম চরকির জন্য।

চরকি অরিজিনাল সিরিজটির নাম ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’। হ্যালোইন উপলক্ষে মুক্তি পাচ্ছে সিরিজটি। বোঝাই যাচ্ছে দেশি খাবারের সঙ্গে পরিমাণমতো ভূত নিয়ে আসছেন মোশাররফ করিম। ৩ সপ্তাহের ৩ পর্বে দর্শকদের জন্য থাকছে ৩ রকম বাংলা ভয়ের স্বাদ! ৩০ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে দর্শকরা দেখতে পাবেন সিরিজটির প্রথম পর্ব ‘বোয়াল মাছের ঝোল’।

‘আধুনিক বাংলা হোটেল’–এর মাধ্যমে চরকির অরিজিনাল সিরিজে মোশাররফ করিম প্রথমবারের মতো কাজ করলেন। এর আগে তিনি চরকির অরিজিনাল ফিল্ম ‘দাগ’–এ অভিনয় করেন। ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ সিরিজের চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন কাজী আসাদ। শরীফুল হাসানের ছোট গল্প থেকে সিরিজটির চিত্রনাট্য করেছেন নির্মাতা। নামের মধ্যেই সিরিজটির রহস্য লুকিয়ে আছে। গল্পের যোগাযোগ আছে খাবারের সঙ্গে। লেখকের ‘খাসির পায়া’ ছোট গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘খাসির পায়া’ পর্ব, ’নো এক্সিট’ গল্প থেকে নির্মাণ করা হয়েছে ‘হাঁসের সালুন’ আর ‘বোয়াল মাছের ঝোল’ পর্বটি নির্মিত হয়েছে ‘খাবার’ নামের ছোট গল্প থেকে। কাজী আসাদ জানান, ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ সিরিজে দর্শক নানা রকম ঘরানার মিশেল পাবেন। গল্পে সাইকোলজিক্যাল হরর, ফ্যান্টাসি, থ্রিলার ও মিথলজির মিশ্রণ রয়েছে।

তিনটি গল্পে তিনভাবে দেখা যাবে মোশাররফ করিমকে। অভিনেতা জানান, খাবারের নাম দিয়ে যে এমন সব গল্প হতে পারে এটা তার ভাবনাতেই ছিল না। তার দাবি, দর্শকরা সিরিজটি দেখে বিস্মিত হবেন।

মোশাররফ করিম বলেন, ‘সিরিজে আমার চরিত্রগুলোতে দেখা–অদেখার মিশ্রণ রয়েছে। চরিত্রগুলোর কিছু বৈশিষ্ট আমাদের আশপাশের মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। আবার কিছু বৈশিষ্ট অদেখা। কিছু বিষয় আছে বাইরে থেকে বোঝা যায়। কিন্তু তার মনের মধ্যে যা চলছে, সেটি বোঝার উপায় থাকে না, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব থাকে। এমন বিষয় আনতে হয়েছে সিরিজটির অভিনয়ে। এসব ক্ষেত্রে আমি আমার নিজের অনুভূতি–চিন্তা কাজে লাগিয়েছি। আর কিছু অবজারভেশন তো থাকেই।’

নির্মাতা জানান, তার ইচ্ছা ছিল, এক প্রজেক্টে মোশাররফ করিমের মতো অভিনেতাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে হাজির করার। মোশাররফ করিমও কাজটি করে খুব মজা পেয়েছেন বলে দাবি নির্মাতার। শুটিং অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে নির্মাতা জানান, শুটিং ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছেন তারা। তাদের মনে হয়েছে, যেটা তারা করতে চেয়েছিলেন, সেটা করতে পেরেছেন। মোশাররফ করিমকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পেরেছেন বলে মনে করছেন কাজী আসাদ।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে মোশাররফ করিম কাজটিতে ডুবে গিয়েছিলেন। কারণ, ‘হাঁসের ছালন’ যখন শুট করি, বরিশালে, তখন টানা তিন রাত আমাদের শুটিং করতে হয়েছিল। সেখানে লক্ষ্য করেছি, মোশাররফ করিম যেন ফুল চার্জে ছিলেন। সারা রাত শুটিং করে সকালে কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার শুটিং করেছেন। ‘খাসির পায়া’তেও একই অবস্থা। এ গল্পের প্রায় সব দৃশ্যই ছিল রাতে। আমার ধারণা, ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ ভালো লেগেছে জন্যই এত পরিশ্রম করেছেন তিনি।’

৯ জুলাই ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ প্রজেক্টে চুক্তিবদ্ধ হন মোশাররফ করিম। দুই মাস বিভিন্ন লোকেশন হয় এর শুটিং। সিরিজটির বিভিন্ন পর্বে অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, সালাহউদ্দিন লাভলু, শিল্পী সরকার অপু, একে আজাদ সেতু, নিদ্রা নেহাসহ অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *