বালু ব্যবসায়ী ও মাদক সম্রাট আহাদ খাঁ আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি : তানভীর তুহিন

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে বালু ও মাটি লুটের গড ফাদার হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তি মো. আহাদ খাঁ। ঢেউখালী ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুুল কুদ্দুস খানের পুত্র সে।

২০১৪সাল থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের দোহাই দিয়ে ও তাকে ভাই পরিচয় দিয়ে রাতারাতি ক্ষমতা ও অর্থের মালিক বনে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে সদরপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদরপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চন্দ্রপাড়া বাজারের একটি দোকান থেকে তাকে আটক করে।

জানাযায়, মো. আহাদুজ্জামান খাঁ ওরফে আহাদ খা ১৯৮৪সালে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া সুলতানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ওই স্কুলের দপ্তরি হিসাবে নিয়োগ পায়। সে সময়ে কোনো মতে সংসার চললেও ভাগ্যবদলের চাবি পেয়ে যান ২০১৪সালের মাঝামাঝি সময়ে। ২০১৪ সালে যখন ফরিদপুর-৪ আসনে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন তখন আহাদ খাঁ স্কুলের চাকুরী বাদ দিয়ে যোগদেন স্থানীয় সাংসদের সাথে। এরপর সে এমপি কে দাদা ভাই বলে সম্বোধন করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। অনেক গরীব মানুষের জায়গা জমি দখলে করেন। এরপর তার নিজ বাড়ি চন্দ্রপাড়া এলাকার পাশেই বয়ে চলা পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে শুরু করেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। নিয়মিত বালু উত্তোলন করে চন্দ্রপাড়ার প্রায় এক অংশ গ্রামের জায়গা দখল করে বালুমাটির স্তপ (বেড) তৈরি করেন। শত শত বিঘা জমির উপর স্তপকৃত বালু বিক্রি শুরু হয় এবং কামাতে থাকেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়াও এলাকায় ইয়াবার ব্যবসা চালাতেন বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

রাজনীতিতে এসে হঠাৎ আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পাওয়ায় মাদক ও নদীর অবৈধ বালু বিক্রির টাকায় ভাঙ্গা বাড়ি থেকে তৈরি করেন আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। যে বাড়িতে এমপি নিক্সন চৌধুরীর ছবি টাইলস দিয়ে বাধিয়ে দিনরাত ভক্তি করলেও গত ৫আগষ্টের পর ওই ছবি আবার ভেঙ্গে ফেলেন। ছবি ভাঙ্গার ওই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে আহাদ প্রকাশ্যে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন।

একজন সামান্য স্কুল দপ্তরি থেকে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এই আহাদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়ার নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক এলাকাবাসী বলেন, আহাদ কে পুলিশ আটক করায় আমরা অনেক খুশি। ওর বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এব্যাপারে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোতালেব হোসেন জানান, আহাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানুষের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *