বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মো. আবু তাহের এ আদেশ দেন।
এর আগে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। বুধবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মো. আবু তাহের ওইদিন ধার্য করেছিলেন।
ওইদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবী তার পক্ষে হাজিরা দেন, আর খালেদা জিয়া ও খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবীরা। ওইদিন শুনানি শেষ না হওয়ায় আজ ২৭ নভেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন ও হান্নান ভূঁইয়া শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।
জানা যায়, ওইদিন সকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য উপস্থিত হন মামলার অন্যতম দুই আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী। আংশিক শুনানির পর পরবর্তী শুনানির জন্য নতুন তারিখ দেন বিচারক। চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্ব দেয়ায় রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে।
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে শাহবাগ থানায় দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ পিছিয়ে ২০ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছর ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন: সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম এবং খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন
এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এদের মধ্যে নিজামী ও মুজাহিদকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি দেয়া হয় ও অন্য পাঁচজন মারা গেছেন।