ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা প্রশাসকের গণশুনানিতে উপকৃত মানুষেরা !

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,

কেউ এসেছেন চিকিৎসার জন্য সাহায্য নিতে, কেউবা এসেছেন পড়াশুনার জন্য সাহায্য নিতে। যারা ডিসির রুম পর্যন্ত যেতে পাড়ছেন না তাদের কাছেই ছুটে আসছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। সপ্তাহে একদিন করে গণশুনানির এই সেবা পেয়ে খুশি সেবাগ্রহীতারা। সরেজমিনে দেখা যায়, হঠাৎ নিজের অফিস ছেড়ে কার্যালয়ের নিচে ছুটে এলেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন এক ভুক্তভোগীর সাথে। জানা গেলো সেই ভুক্তভোগী শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে যেতে পাড়ছেন না ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সেই গণশুনানিতে। সে কারণে ইশরাত ফারজানা নিজেই ছুটে এলেন তার কাছে।

সেই ভুক্তভোগী মাসুদা বেগম বলছেন, আমি প্যারালাইজ রোগে গত দুবছর ধরে আক্রান্ত।

ডিসি মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছিলাম। এরপর গণশুনানির দিন এখানে আসছি। কিন্তু উপরে যাওয়ার মতো শক্তি নেই। পরে ডিসি নিজেই তার অফিস ছেড়ে আমার কাছে এসেছেন। আমার বিষয়ে সব কথা শুনেছেন। আমাকে নগদ অর্থ সহায়তা ও হুইলচেয়ারও দিয়েছেন। আমি অনেক খুশি। শুধু সেই ভুক্তভোগী নয়; ঠাকুরগাঁও জেলা ডিসির গণশুনানিতে এভাবেই সংকটময় জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন অনেকে। জানা যায়, সপ্তাহে একদিন বুধবারে সাধারণ দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য গণশুনানি করেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।

এদিন সে সব মানুষদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেন তিনি। কাউকে দিচ্ছেন হুইল চেয়ার, কাউকে দিচ্ছেন নগদ অর্থ। সেই সাথে অনেকের জমি বিরোধের নানান সমস্যার সমাধানও করছেন তিনি। সেবা পাওয়া ভুক্তভোগী রজিনা বেগম, জয়নুল সহ বেশ কয়েকজন বলেন, আগে কখনো শুনিনি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক নিজেই সমস্যার সকল বিষয় শুনে সহায়তা দেবেন। এবার তা চোখে দেখলাম। একজন জেলা প্রশাসক এতটা আপন হতে পারে তা আমাদের ডিসিকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। স্কুল শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, আমার বাবা একজন ভ্যান চালক। ভর্তির বিষয়ে টাকার সমস্যা থাকায় আমি এখানে আবেদন করেছিলাম। এরপর ডিসি মহোদয় আমাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, একজন জেলা প্রশাসকের কাজ শুধু অফিস পর্যন্ত থাকবে তা নয়। সবার পাশে থাকাও একটা বড় কাজ। আমি যতটা সম্ভব চেষ্টা করি মানুষের মাঝে থেকে তাদের পাশে থাকার, তাদের সাহায্য করার। আমার গণশুনানিতে আমি সবার কথা শুনে তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। এই কাজে কারো উপকার হচ্ছে এতেই আমার মন শান্তি পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *