চাহিদা কমলেও কেন বাড়ছে স্বর্ণের দাম?

তাঁতীবাজার থেকে নিয়ন্ত্রণ হয় দেশের স্বর্ণের দাম।

জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। যা অক্টোবর শেষে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকায়। অর্থাৎ ১০ মাসে ভরিপ্রতি স্বর্ণের দাম বেড়েছে সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। গত বছর বেড়েছিল ১৭ হাজার ৬১৩ টাকা। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে প্রতিমাসে ধাতুটির দাম বাড়ছে দ্বিগুণ হারে।


বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে, যতো দামি হচ্ছে মূল্যবান স্বর্ণ, ততো কমছে এর আলঙ্কারিক ব্যবহার।


চাহিদা কমলে যেখানে অর্থনীতির সাধারণ তত্ত্বে দাম কমার কথা, সেখানে কেন বিপরীত চিত্র স্বর্ণের বাজারে? জানতে চাই স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাজুসের কাছে।


বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, তাঁতীবাজারে মার্কেটের ওপর দেশের স্বর্ণের বাজার অনেকটাই নির্ভরশীল। অন্যান্য পণ্য যেভাবে দুই মাস- তিন মাস পর পর দাম সমন্বয় করে, স্বর্ণের ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। এটাই হচ্ছে মূল বিষয়। তাই আমরা তাৎক্ষণিক হোক বা দুই-তিন দিন সময় নিয়ে হোক, সেই পদ্ধতিকে অনুরসরণ করতে বাধ্য।

বিশ্ববাজারের চিত্র বলছে, সব রেকর্ড ভেঙে স্পট মার্কেটে ১ নভেম্বর প্রতি আউন্স মানে অর্থাৎ প্রায় আড়াই ভরির দাম ঠেকেছে ২ হাজার ৭৫৪ ডলারে।


এর পেছনে অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বৈশ্বিক অস্থিরতাকে দায়ী করে বলেন, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেষারেষির ফলে বিশ্ব অর্থনীতি অস্থির। যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ নেয়ার প্রবণতাও অনেক বেড়েছে। ফলে ওই অস্থিরতা না কমলে কমবে না স্বর্ণের দাম।


পিওর গোল্ড বা তেজাবি স্বর্ণের দাম কেন বাড়ছে- তা দেখতে রাজধানীর তাঁতীবাজারে পোদ্দারদের মুখোমুখি সময় সংবাদ। জানতে চাইলে তারা বলছেন, স্বর্ণের দাম আউন্স প্রতি বেড়ে গেলে তাঁতীবাজারেও বেড়ে যায়। আর স্বর্ণের ব্যবসা তাঁতীবাজার কেন্দ্রীক হওয়ায় পুরো দেশেই এর প্রভাব পড়ে।


তার সঙ্গেই হিসাব মেলাতে চাই, আমদানি আর ব্যাগস রুলস মিলিয়ে বৈশ্বিক স্বর্ণবাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কতটুকু?


দেশের বাজারে বছরে স্বর্ণের চাহিদা ২০-৪০ টন। এই চাহিদার বড় অংশ মেটে পুরানো অলঙ্কার কেনাবেচার মাধ্যমে। আমদানিকারকদের তথ্য, চলতি বছর স্বর্ণ আমদানি হয়নি।

কাস্টমসের হিসাব বলছে, ২০২৩ সালে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় দেশে এসেছে ৩১ টনের বেশি স্বর্ণ। পাচারের রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে গিয়ে জব্দ হয়েছে ১০১ কোটি ৮৯ লাখ টাকার স্বর্ণ। তাহলে চাহিদার বেশি স্বর্ণ যাচ্ছে কোথায়?


যদিও তাঁতীবাজারের পোদ্দাররা বলছেন, তারা তাদের নির্ধারিত বিক্রেতার কাছেই স্বর্ণ বিক্রি করেন। চোরাচালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *