সদরপুরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে এক মহিলার উপর হামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি : তানভীর তুহিন

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের কোলপাড় ডাঙ্গী গ্রামে পারিবারিক ও পৈত্রিক ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে রাশিদা বেগম (৪২) নামে এক মহিলার উপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে হামলার শিকার হওয়া রাশিদা বেগম বাদি হয়ে তার স্বামীর মাধ্যমে সদরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

তার অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন,
আমি রাশিদা বেগম (৪২) স্বামীঃ শেখ চাঁন মিয়া, সাং কোলপাড় ডাঙ্গী, পোঃ সদরপুর, ইউপিঃ ভাষানচর, থানাঃ সদরপুর, জেলাঃ ফরিদপুর। সদরপুর থানায় এই মর্মে ১। সাগর খান (২২) ২। শান্তনা আক্তার (২৫) ৩। রেকসোনা আক্তার (৩০) সর্ব পিতাঃ আক্কাস খান ৪। ফিরোজা বেগম (৫৫) স্বামীঃ আক্কাস খান সর্ব সাং দুর্জন খার ডাঙ্গী, পোঃ ও ইউপিঃ ঢেউখালী, থানাঃ সদরপুর, জেলাঃ ফরিদপুর ৫। সিদ্দিক মোল্যা (৫৫) পিতাঃ শাহজাহান মোল্যা, সাং বাকপুরা, পোঃ বিশ্ব জাকের মঞ্জিল, ইউপিঃ নুরুল্যাগঞ্জ, থানাঃ ভাংগা, জেলাঃ ফরিদপুর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করিতেছি যে, বিবাদীরা আমার ভাতিজা, ভাতিজি ও ভাবী হয় এবং ৫নং বিবাদী আমার নিকট আত্মীয় হয়। বিবাদীদের সাথে আমার পারিবারিক ও পৈত্রিক ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। বিবাদীদেরকে আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ বণ্টন করিয়া দিতে বলিলে বিবাদীরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। সেই সূত্র ধরিয়া বিবাদীরা মাঝে মধ্যে আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারপিট করার হুমকি দিয়া আসিতে ছিল। পরবর্তীতে আমি বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করিলে বিবাদীরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমার ১৪৪ ধারা বলবৎকৃত সম্পত্তি বিবাদীরা অমান্য করিয়া ঘর দরজা নির্মানের সংবাদ পাইয়া ২৫ ডিসেম্বর বিকাল অনুমান ৫ ঘটিকার সময় আমি বিবাদীদের বাড়ীতে গিয়া বিবাদীদের ঘর দরজা নির্মানের কারন জিজ্ঞাসা করিলে বিবাদীরা আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। তখন আমি উল্লেখিত বিবাদীদের গালিগালাজ করিতে নিষেধ করায় বিবাদীদের সাথে আমার কথাকাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ৪নং বিবাদী ফিরোজা বেগমের হুকুমে অন্যান্য বিবাদীদের হাতে থাকা লাঠিসোটা দিয়া আমার মাথায়, নাকে, মুখে, হাতে পায়ে, বুকে পিঠে এলোপাতারী পিটাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। এ সময় ৪নং বিবাদী ফিরোজা বেগম আমার গলায় থাকায় ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন মূল্য ৭০ হাজার টাকা জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়। ১নং বিবাদী সাগর খান ও ৫নং বিবাদী সিদ্দিক মোল্যা আমার পরনের কাপড় চোপড় টানা হেঁচড়া করে, ইহাতে আমার শ্লীলতাহানি ঘটে। তখন আমার ডাকচিৎকারে স্থানীয় সাক্ষী ১। ফিরোজা বেগম (৫৫) স্বামীঃ হাসেম মাতুব্বর ২। গহের মাতুব্বর (৩৬) পিতাঃ হাসেম মাতুব্বর ৩। রুমা আক্তার (৩০) পিতাঃ মৃত আব্দুল আলী খানসহ আরো লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীরা আমাকে খুন জখমের হুমকি দিয়া চলিয়া যায়। আমার স্বামী শেখ চাঁন মিয়া ও আমার পুত্র শাকিব শেখ সংবাদ পাইয়া ঘটনাস্থলে আসিয়া আমার অবস্থা খারাপ দেখিয়া স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় সদরপুর হাসপাতালে আনিলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। বর্তমানে বর্তমানে আমি সদরপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি আছি। বিবাদীরা এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে, আমার স্বামী-সন্তানদেরকে অব্যাহত ভাবে হুমকি ধামকি দিয়া আসিতেছে। বিবাদীদের হুমকির ভয়ে আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করিতে পারিতেছি না এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। বিবাদীরা যে কোন সময় আমাদেরকে আরো বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করিতে পারে। বিবাদীরা খারাপ, দাঙ্গাবাজ ও পরসম্পদলোভী প্রকৃতির লোক। আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এই অভিযোগ আমার স্বামী শেখ চাঁন মিয়ার মাধ্যমে থানায় প্রেরন করিলাম।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বর্তমানে সদরপুর হাসপাতালে রাশিদা বেগম গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার পরিবার খুব আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *