আন্দোলন দমন করতে পুলিশ প্রায় এক হাজার পিটিআই দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। ছবি : সংগৃহীত।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে গত কয়েকদিনে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীদর আন্দোলন দমন করতে পাকিস্তান পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় এক হাজার পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, দাবি করেছে ইসলামাবাদ পুলিশ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করেন রাজধানী পুলিশের মহাপরিদর্শক আলী নাসির রিজভী। খবর আরব নিউজ
রিজভী জানান, রোববার থেকে মঙ্গলবার (২৪-২৬ নভেম্বর) পর্যন্ত মোট ৯৫৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুধবার ভোরের দিকে রাজধানী থেকে বিক্ষোভকারীদের পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে, বিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মকর্তা ও আধা সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের চার সদস্য নিহত হয়েছেন। সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ছাড়া মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) পিটিআই দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন। যদিও তাদের রাজধানীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তারা ডি-চক (ইসলামাবাদ ডি চক) এলাকায় একটি সমাবেশের পরিকল্পনা করেছিলেন, তবে রেড জোনে প্রবেশ করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বাধা দেয়। পুলিশ এবং সেনারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করেন। অতিরিক্ত দমন-পীড়নের মুখে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।
এসময় খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি বিক্ষোভস্থল ত্যাগ করেন। এরপরই পিটিআই দলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বিক্ষোভের ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিহত করেছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আন্দোলনে অতিরিক্ত দমন-পীড়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি জানায়, বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অপ্রয়োজনীয় ও অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী।
উল্লেখ্য, ইমরান খান যিনি ২০২২ সালে একটি অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন, এ বছরের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। তাকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় রাখতে পাকিস্তান সরকার একাধিক আইনি মামলা দাখিল করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার দল পিটিআই এবং তার সমর্থকরা লাগাতার এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে।